দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে আজ শনিবার থেকে চীনের উপহারের সিনোফার্মের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ টিকার প্রথম ডোজ প্রয়োগের চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের ব্যবধান নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডাইরেক্টর (এমএসসিএন্ডএএইচ) ও কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বৃহস্পতিবার এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, সারাদেশের সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সরকারি জেনারেল হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ঢাকায় সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে চার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেগুলো হচ্ছে- ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
যাদের জন্য সিনোফার্মের ভ্যাকসিন
১০ ক্যাটাগরির ব্যক্তিদের এই ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ভ্যাকসিনের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রে ইতোমধ্যে যারা ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও ভ্যাকসিন পাননি, তাদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা যারা আগে ভ্যাকসিন নেননি, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মী, যাদের বিএমইটি নিবন্ধন কিংবা কার্ড আছে, সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা, সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি, সরকারি ম্যাটস ও সরকারি আইএইচটি’র শিক্ষার্থীরা, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা, বিডা’র আওতাধীন ও অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক সরকারি প্রকল্পে (পদ্মা সেতু প্রকল্প, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, এক্সপ্রেস হাইওয়ে প্রকল্প, রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র) সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সারাদেশে কোভিড-১৯ মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ওয়ার্ড/পৌরসভার কর্মী এবং বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিকরা পাবেন সিনোফার্মের এই টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনায় আরও বলা হয়, আগে অন্য কোনও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে এই ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। নিবন্ধন ছাড়া কেউ ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবে না। তাছাড়া অন্য কোনও দেশ থেকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করে বাংলাদেশে এলে দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে এ ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল এবং ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি, সরকারি ম্যাটস এবং সরকারি আইএইচটি শিক্ষার্থীরা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে স্টুডেন্ট আইডি’র তথ্য লিপিবদ্ধ করে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন, কিন্তু দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণের আগে জাতীয় পরিচয়পত্র সুরক্ষায় ওয়েব পোর্টালে/অ্যাপে নিবন্ধন করে নিতে হবে।
যাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না
সিনোফার্মের এই ভ্যাকসিন ১৮ বছরের নিচে কাউকে দেওয়া হবে না। ভ্যাকসিন গ্রহণের সময় জ্বর থাকলে বা অসুস্থ থাকলে, ভ্যাকসিনজনিত অ্যালার্জির পূর্ব ইতিহাস থাকলে, প্রথম ডোজ গ্রহণের পর মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে তিনি এ ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না। অনিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যেমন: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ঘা, অ্যাজমা, কিডনি রোগ, ডায়ালাইসিস নিচ্ছেন এমন ব্যক্তি, ক্যানসারে আক্রান্ত এবং স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জনগোষ্ঠীর ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এর আগে ১৪ জুন সিনোফার্ম ও ফাইজারের টিকা প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, চীনের উপহার হিসেবে দেয়া সিনোফার্ম এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফাইজার টিকা দিয়েই আবারো প্রথম ডোজ শুরু হচ্ছে। হাতে যতটুকু টিকা পাওয়া গেছে তা দিয়ে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম আবার চালু হবে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনা আবার বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, এখন থেকেই সবাইকে আবার সচেতন হতে হবে। হাসপাতালে শয্যা কম। করোনা বাড়লে সেবাও ব্যাহত হবে। তাই প্রতিরোধের ওপর জোর দিতে হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, চীন থেকে দুই দফায় উপহার হিসেবে দেশে ১১ লাখ ডোজ ও ফাইজার থেকে এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এসেছে। সরকারের হাতে সব মিলিয়ে প্রথম ডোজ শুরু করতে টিকা রয়েছে ১২ লাখ ৬২০ ডোজ।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি