December 23, 2024, 9:54 am
জহির রায়হান সোহাগ,চুয়াডাঙ্গা/
চুয়াডাঙ্গায় বেড়েই চলেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। নতুন করে এ জেলায় আরও ৭৬ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এটিই একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত বলে জানিয়েছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। শনাক্তের হার বিবেচনায় ৩৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন আরও দু’জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭৭ জনে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত শুক্রবার রাতে ১৯৩ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসেছে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগে। এরমধ্যে ৭৬ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ হাজার ৫২৩ জন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় নতুন শনাক্ত ৭৬ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৩৫ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ৩৫ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৪ জন ও জীবননগর উপজেলার ২ জন। শুক্রবার রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় সক্রিয় রোগী ছিলেন ৫০৮ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ৪৪ জন। রেফার্ড করা হয়েছে ৪ জনকে। বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন ৪৬০ জন।
সদর উপজেলার সক্রিয় ১৭১ জন রোগীর মধ্যে হাসপাতালে ১৯ জন ও বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৫১ জন। রেফার্ড করা হয়েছে ১ জনকে। আলমডাঙ্গা উপজেলার সক্রিয় ৪৮ জন রোগীর মধ্যে ৬ জন হাসপাতালে ও ৪১ জন বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। একজনকে রেফার্ড করা হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলার সক্রিয় ২০২ জনের মধ্যে ১৮৪ জন নিজ নিজ বাড়িতে ও ১৬ হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রেফার্ড রয়েছেন ২ জন। জীবননগর উপজেলায় সক্রিয় ৮৭ জন রোগীর মধ্যে ৮৪ জন নিজ নিজ বাড়িতে ও ৩ জন হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৭ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৩৮ জন।
চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ভারত সীমান্তবর্তী দামুড়হুদা উপজেলা ১৪ দিনের জন্য বিশেষ লকডাউন করা হয়েছে। বিশেষ বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে জীবননগর উপজেলাতেও। লকডাউনকৃত এলাকা ও বিধি নিষেধ জারি করা এলাকা নিয়মিত তদারকি করছে প্রশাসন। কোভিড-১৯ প্রতিরোধে প্রচার প্রচারণাসহ করা হচ্ছে মাস্ক বিতরণ। স্বাস্থ্য বিধি অমান্যকারীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে করা হচ্ছে জরিমানাও।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান জানান, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পুনঃপুনঃ তাগিদ দেয়া হচ্ছে। এরপরও স্বাস্থ্য বিধি মেনে শতভাগ মাস্ক পরছে না মানুষ। দায়িত্বশীলতার পরিচয় না দেয়ায় চুয়াডাঙ্গায় সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ভয়াবহ ছোয়াছে ভাইরাসে শুধু শহর ও শহরতলীতেই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সংক্রমিত হচ্ছেন মানুষ। অনেকে সর্দি কাশি জ্বরে আক্রান্ত হয়েও নমুনা দিয়ে করোনা পরীক্ষায় আগ্রহী হচ্ছে না। অসুস্থতার মাত্রা বেড়ে যখন শ্বাসকষ্ট তীব্রতর হচ্ছে তখন তাদের নিকটজনেরা স্বাস্থ্য বিধি না মেনে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিচ্ছেন। এধরনের রোগীর মৃত্যু হচ্ছে বেশি।
সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার তাগিদ দিয়ে জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে এবং সংক্রমণ রোধে সকলে দায়িত্বশীল হওয়া এখন খুবই জরুরী।
Leave a Reply