দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক,খোকসা/
জ্বীন দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করে দিব,আর গরীব দরিদ্র অসহায় থাকতে হবে না। এমন সব প্রলোভন দিয়ে গ্রামের অসহায় সহজ সরল পরিবারকে টার্গেট করে ওই সকল পরিবারে থাকা অল্প বয়সি মেয়েদের দিয়ে আসন বসানোর কথা বলে দির্ঘদিন ধরে তাদের সাথে শারিরীক সর্ম্পক করে আসছিল রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের প্রাণপুর গ্রামের ভন্ড সাধু সবুর মন্ডল ওরফে সবুজ নামের এক প্রতারক।
দির্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসা ভন্ড সাধুর বিরুদ্ধে এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে এলাকাবাসি।
এ ঘটনায় (১৫ জুন ) মঙ্গলবার ধর্ষনের শিকার ওই ছাত্রীর বোন পাপিয়া ও অপর ছাত্রীর পিতা মোঃ রবিউল ইসলাম অরফে হুমায়ুন বাদী হয়ে রাজবাড়ীর আদালতে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেছে।
রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্যাইবুনাল আদালতে নারী শিশু ও নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেছে। যার মিস পি নং-১৭৭/২০২১ ও ১৭৮/২০২১। আদালত রাজবাড়ীর পাংশা মডেল থানাকে মামলা ২টি এফআই আর করার নির্দেশ প্রদান করেছেন।
ওই তরুনীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমাদের জ্বীন-পরীর ভয় দেখিয়ে ২ জনের সাথেই ৪ বার করে শারীরিক সর্ম্পক করেছে, প্রথমে জোর করে পরে আমাদের সকল আত্বীয়কে জ্বীন মেরে ফেলবে এ কথা কাউকে বললে সে এভাবে ভয় দেখিয়ে আমাদের সাথে শারিরিক সর্ম্পক করেছে।
৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ওই তরুনী বলেন প্রথমে আমার বাবাকে প্রলোভন দেখিয়ে বড় লোক বানানোর কথা বলে তারপর রাতে আমাকে এক গ্লাস পানি নিয়ে পাশেই একটি তাল গাছের তলায় যেতে বলে, আমি সেখানে গেলে নানা ধরনের কথা বলে আমাকে জোর করে হাত বেধে ফেলে আমার সাথে জোবরদস্তি করে আমার ইজ্জত নষ্ট করে।
আমি চিৎকার দিতে গেলে আমাকে ভয় দেখানো হয় জ্বীন আমার বাবাকে মেরে ফেলবে এ কথা কাউকে বললে আমার পরিবার ধংষ হয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়। ওই তরুনী আরো বলেন, এভাবে ৪১দিন জিনের খায়েশ মিটিয়ে দিলে আমাদের ভাগ্যর পরিবর্তন হয়ে যাবে।
অপর তরুনী জানান,-আমি আমার বোনের বাড়ীতে অবস্থান করছি বেশ কিছুদিন ধরে, রাতে আমি ও আমার ভাইয়ের মেয়ে এক সাথেই ঘুমায় এর মধ্যে ওই লম্পট ভন্ড সাধু সবুরের নজর পড়ে আমার দিকে সে নানা ভাবে আসন বসানোর কথা বলে, আমাকে তার বাড়ীতে যাওয়ার কথা বলে। আমি যেতে না চাইলে আমার বোন ও বোনের জামাইয়ের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয়, আমি আসনে গেলে প্রথমে আমাকে ২ রাকাত নামাজ পড়ার কথা বলে আমি নামাজ শেষ করতে করতে ঘরের আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়, সেই সাথে ওই ভন্ড সাধু সবুর একটি কালো রংয়ের জুব্বা পড়ে আমার সামনে আসে এবং আমার গায়ে হাত দেয় এ সময় আমি নিষেধ করলে সে জানায় আমি জ্বীন সবুরের রুপে তোমার কাছে আসছি, আমার খায়েশ মিটিয়ে দাও তোমার মনের সকল আশা পূরন হবে।
ওই তরুনী একই সাথে বলেন ওই পাষন্ড ভন্ড সবুর জোর করে জায় নামাজের পাটির উপর ফেলে আমাকে ধর্ষণ করে, আমি চিৎকার করে কান্না করেছি কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি, সবুরের বাড়ীর লোকজনও জানত ওই ঘরে কি হচ্ছে কিন্তু কেউ আসেনি আমাকে বাঁচাতে।
এর পর থেকে নানা ভাবে জ্বীনের ভয় দেখিয়ে আমার পরিবারের সকলকে মেরে ফেলবে বলে আমার সাথে ৪ বার শারিরীক সর্ম্পক করেছে। বিষয়টি আমি বুঝতে পেরে আমার বোনের সাথে শেয়ার করার পর সবুর বিষয়টি জানতে পেরে আমাকে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে বাড়ীতে সন্ত্রাসী পাঠিয়ে ভয় ভীতি দেখাচ্ছে যেন এ বিষয় নিয়ে আমরা মুখ না খুলি।
এদিকে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এ বিষয়টির বিচার কামনা করেছেন, স্থানীয়রা জানিয়েছেন সবুর চতুর প্রকৃতির লোক, বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারনা করাই তার পেশা। এক সময় র্যাবের পোশাক পড়ে ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়ে জেল খেটেছে সবুর। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের প্রতারনা এর মধ্যে চাকুরী দেওয়ার কথা বলেও সে টাকা নিয়ে করেছে প্রতারনা।
এ বিষয়ে সবুরের সাথে কথা বলার চেষ্ঠা করা হলে তার মুঠো ফোন বন্ধ ও বাড়ীতে গিয়ে না পাওয়ায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, ওই সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে সদ্য বিদায়ী ওসি শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ছাত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। যদিও ঘটনার পর থেকেই ভণ্ড সাধু সবুর মন্ডল পলাতক বয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি