জহির রায়হান সোহাগ,চুয়াডাঙ্গা/
চুয়াডাঙ্গায় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে করোনা পরিস্থিতি। গত ১ মাস থেকে সংক্রমন ও মৃত্যুর হার ঊর্ধমুখী। গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় নতুন করে ৫৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যা করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এক দিনে সর্বোচ্চ। শনাক্তের হার ৪৬ দশমিক ০৯ শতাংশ। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২ হাজার ৪০৪ জনে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৩ বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে । এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৭৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে হয়েছেন ৪০ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হলেন ১ হাজার ৯২৯ জন। করোনার উপসর্গ নিয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন আরও ৪ জন।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া তিনজনই দামুড়হুদা উপজেলা বাসিন্দা। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন দামুড়াহুদা উপজেলা শহরের গার্লস স্কুলপাড়ার আছিয়া খাতুন, দশমীপাড়ার সখিনা খাতুন ও বিষ্ণুপুর গ্রামের রুবি খাতুন।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে আরও ৪ জন। তারাও দামুড়হুদা উপজেলার বাসিন্দা। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- দামুড়হুদা উপজেলার দুধপাতিলা গ্রামের মাছুরা খাতুন, একই উপজেলার তেঘরি গ্রামের ফাতেমা খাতুন, কুড়ুলগাছি গ্রামের খোরশেদ আলী ও কোমরপুর গ্রামের হামিদুল ইসলাম।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাতে ১২৮ টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগে। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয় ৫৯ জনের। নতুন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সদর উপজেলার ২৯ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৪ জন, দামুড়হুদা উপজেলায় ১৮ জন ও জীবননগর উপজেলার ৮ জন রয়েছেন। নতুন আরও ১৩১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১১ হাজার ৫০০ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। নমুনার ফলাফল পাওয়া গেছে ১০ হাজার ৯২৫ জনের।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে, বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৪০১ জন। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ১২১ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২৭ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১৬২ জন, জীবননগর উপজেলার ৮১ জন রয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আক্রান্ত ১২১ জনের মধ্যে ১৭ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন সদর হাসপাতালে ও বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১০৩ জন। বাইরে রেফার্ড করা হয়েছে ১ জনকে। আলমডাঙ্গা উপজেলার আক্রান্ত ২৭ জনের মধ্যে ২০ জন বাড়িতে ও ৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রেফার্ড করা হয়েছে ১ জনকে। দামুড়হুদা উপজেলার আক্রান্ত ১৬২ জনের মধ্যে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৪৮ জন ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১২ জন। বাইরে রেফার্ড করা হয়েছে ২ জনকে। এছাড়া জীবননগর উপজেলার আক্রান্ত ৮১ জনের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১ জন ও বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮০ জন।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান জানান, গত বুধবার রাতে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব থেকে প্রাপ্ত ১২৮ টি নমুনার ফলাফলে ৫৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে একদিনে এটিই সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা। করোনায় আক্রান্তেদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে। অক্সিজেনেরও কোন সঙ্কট নেই।
তিনি আরও জানান, উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দাফনকার্য সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, করোনার সংক্রমন বাড়ায় ১৪ দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছে ভারত সীমান্তবর্তী পুরো দামুড়হুদা উপজেলা। সেখানে আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো চলছে কঠোর লকডাউন। লকডাউন বাস্তবায়ন করতে মাঠে কাজ করছে প্রশাসন।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি