December 23, 2024, 11:32 pm
জহির রায়হান সোহাগ,চুয়াডাঙ্গা/
চুয়াডাঙ্গায় এক নবজাতককে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের উপশম নার্সিংহোমে সদ্য ভূমিষ্ঠ ওই নবজাতককে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কিনেছেন নিঃসন্তান এক দম্পত্তি রোববার দিনভর ছিল এমন আলোচনা-সমালোচনা। অবশেষে রাতে অভিযান চালিয়ে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দলকা লক্ষীপুর গ্রামের স্কুলপাড়ার মনিরুল ইসলামের স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন সুমাইয়া খাতুন ওরফে অনন্যা (২২)। প্রসব বেদনা শুরু হলে গত শনিবার বিকেলে তাকে ভর্তি করা হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের উপশম নার্সিং হোম। সেখানে ওইদিন সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ওই দিনই নবজাতককে নিয়ে যান দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের রিপন-লিপা দম্পত্তি। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই ওই দম্পত্তি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নবজাতকে কিনে নিয়ে গেছেন বলে শুরু হয় নানা সমালোচনা। বিষয়টি জানতে পারেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলামও।
পরে ওই নবজাতককে উদ্ধারের জন্য সদর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। রোববার সন্ধ্যায় উপশম নার্সিং হোমে যায় পুলিশের একটি টিম। নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরবর্তীতে মেলে সুমাইয়া খাতুনের সন্ধান। সুমাইয়া খাতুন উপশম নার্সিং হোমের তৃতীয় তলায় ভর্তি রয়েছেন। সুমাইয়া খাতুনের শয্যাপাশে থাকা লোকজনও বিষয়টি বেমালুম এড়িয়ে গেলে পুলিশের জেরার মুখে আসল ঘটনা শিকার করতে বাধ্য হন তারা। একপর্যায়ে গতকাল রাতে দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের নিঃসন্তান দম্পতির কাছ থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
সুমাইয়া খাতুনের শয্যাপাশে থাকা ববিতা খাতুন জানান, রিপন আলী ও তার স্ত্রী লিপা খাতুন তার আত্মীয় হয়। পক্ষান্তরে সুমাইয়া খাতুন মানসিক ভারসাম্যহীন ও দরিদ্র। তার স্বামী তাকে ঠিকমতো দেখা শোনা করেন না। সে কারণে সুমাইয়ার সাথে কথা বলে শিশুটি জন্মের পরপরই ওই দম্পতিকে পাইয়ে দিই। ক্লিনিকের খরচ ও সুমাইয়ার চিকিৎসার ভার নেন রিপন-লিপা দম্পত্তি। শনিবার নবজাতক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করার কিছুক্ষণ পরই তারা ওই সন্তানকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। শিশুটি বিক্রির বিষয়টি সঠিক নয়।
এ ব্যাপারে জানতে উপশম নর্সিংহোমের মালিক ডা. জিন্নাতুল আরার মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছি। উভয়পক্ষের সাথে কথা বলেছি। আসলে তারা যে কাজটি করেছেন সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। শিশু অধিকারও লঙ্ঘন করা হয়েছে। তারা যদি শিশুটিকে নিতে চান তাহলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিতে হবে।
Leave a Reply