দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
করোনাভাইরাসের অব্যাহত বিস্তার প্রতিরোধ করতে কুষ্টিয়া জেলার পৌরসভা এলাকায় পরিপূর্ণ লকডাউন আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার মধ্যরাত ১২টা কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এ–সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
১৮ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত জেলায় এ বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। এই সময়টিতে জনসাধারণকে ঘরের বাইরে আসতে একেবারে নিষেধ করা হয়েছে। জরুরী কাজে বাইরে এলেও মাস্ক পরিধান করতে হবে।
জারি করা গণবিজ্ঞপ্তি মোতাবেক জেলায় দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধ থাকবে। কুষ্টিয়া পৌরসভার মধ্যে কোর প্রকার যানবাহন চলাচল করবে না। নিত্য প্রয়োজনীয় যেমন কাঁচাবাজার, খুচরা ও পাইকারি বাজারসহ ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। জনসমাবেশ করে কোন প্রকার অনুষ্ঠানাদি করা যাবে না। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ, সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
তবে স্বা¯’্যবিধি মেনে জরুরী সরকারী নির্মাণ কাজ চলমান থাকবে ও এ সংক্রান্ত পণ্য পরিবহনও চলবে।
রাখা যাবে। তবে স্বাস্থ্য ভঙ্গ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সব ধরনের পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয়—এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। রাস্তা ও পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে।
আইন শৃঙ্খলা ও জরুরী পরিষেবা যেমন কৃষি উপকরণ, খাদ্যশষ্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, গণমাধ্যম, সরকারের রাজস্ব কার্মকান্ডে নিয়োজিত সং¯’াগুলো ও তাদের কর্মচারীদের চলাচল নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
শিল্প কারখানায় পূর্বের ন্যায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে উৎপাদন অব্যাহত থাকবে। তবে কলকারখানার শ্রমিক কর্মচারীদের কোম্পানীর নিজস্ব পরিবহনে আনা নেয়া করতে হবে।
২৪ ঘন্টায় করোনা শনাক্তের হার ২৯.৭৫ শতাংশ মৃত্যু ৩/
এদিকে ২৪ ঘন্টার ব্যবথানে কুষ্টিয়াতে আবার করোনা শনাক্ত বেড়েছে। এই সময়ে মারা গেছেন ৩ জন।
আজ শনিবার সকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল ইসলাম দৈনিক কুষ্টিয়াকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৬১ জন। শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
তার আগের গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ০১ শতাংশ। সর্বমোট ৩১৪টি নমুনা পরীক্ষা করে আক্রান্তের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছিল ৪৪ জন।
তার আগের ২৪ ঘন্টায় শনাক্তের হার ৩৫ দশমিক ০৯ শতাংশ।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ৫০টি শয্যা করোনা ইউনিটে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনা রোগী ভর্তি আছেন ৬২ জন। হোম আইসোলেশনে আছেন ৫১৯ জন। জেলায় শনিবার পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়ে আছেন ৫৮১ জন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক তাপস কুমার সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।
জেলায় এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণ কেেরছন ১২৭ জন।
অন্যদিকে, গত ১ জুন থেকে ১১ দিনে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭ জন।
এ মৃত্যু হারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর এসএম মুস্তানজিদ বলেন যেহেতু মৃত্যুর তীব্রতা বেড়েছে তাই যারা আক্রান্ত হয়ে আছেন তাদেরকে নিবিড় পরিচর্যায় আনাতে হবে যাতে করে মৃত্যু হার কমানো যায়।
এদিকে লকডাউনকে সমর্থন করেছেন জেলার নাগরিক মুভমেন্টে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। ৪০টি সামাজিক সংগঠনের প্লাটফরম সম্মিলিত সামাজিক জোটের চেয়ারম্যান লেখক ও গবেষষক ড. আমানুর আমান কঠোরভাবে লকডাউন মনিটরিং করার আহবান জানান। তিনি বলেন বিগত সময়ে এসব লকডাউন সঠিকভাবে প্রতিপালিত হতে দেখা যায়নি। যা একপর্যায়ে অর্থহীন হয়ে উঠতে দেখা গেছে। এবার যেহেতু পরিস্থিতি ভয়ের প্রশাসনকে তাই কঠোর হতে হবে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি