দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, খোকসা
পুলিশের সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছিল বিট পুলিশিং কার্যক্রম। সারাদেশের ন্যায় কুষ্টিয়া খোকসাতেও বেশ জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা ১২ বিট পুলিশিং ইউনিটে ভাগ করে কার্যক্রম শুরু হয়। খোকসা জনসাধারণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এর বিট পুলিশিং কার্যক্রম অল্পদিনের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পুলিশি সেবা তৃণমূল পর্যায়ে তাৎক্ষণিক পাওয়াই সাধারন জনগনের মাঝে স্বাস্তি ফিরে আসে।
কিন্ন্অত অজানা কারণেই তিন চার মাস পর থেকেই অদ্যাবধি বিট পুলিশিং এর সকল কার্যক্রম যেন স্থবির হয়ে পড়েছে।
সোমবার (৭ জুন) শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিট পুলিশিং এর কার্যালয়-৮ (শিমুলিয়া ইউনিয়ন) এর কক্ষ তালা মারা।এসময় বিট পুলিশিং সাইনবোর্ড এ থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
গ্রাম্য প্রতিবেশীর সাথে কোলাহলে রোজিনা বেগম নামে এক মহিলা এসেছিল পুলিশের কাছে অভিযোগ দিতে পুলিশিং এর কার্যালয়। পরিষদের দাঁড়িয়ে থাকা চৌকিদার বললেন বিট পুলিশিং কার্যক্রম এখন আর এখানে চলেনা। পরিষদের সচিব জাহিদ হাসান বললেন, প্রায় ছয়-সাত মাস তালাবদ্ধ রয়েছে পরিষদের পুলিশিং কার্যক্রমের জন্য কক্ষ টি তালা বদ্ধ রয়েছে।
খোকসা উপজেলায় ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার’এই স্লোগানকে সামনে রেখে ১ আগস্ট ২০২০ ইং তারিখে ওসমানপুর ইউনিয়নে বিট পুলিশিং এর কার্যক্রমের উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে উপজেলায় প্রথম বিট পুলিশিং এর কার্যক্রম শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে উপজেলার সব ইউনিয়নের এই বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু করেন সেই সময় কর্মরত থাকা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল আলম ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্সপেক্টর মো. ইদ্রিস আলী। বেশ কিছুদিন বিট পুলিশিং কার্যক্রম চললেও বেশিদিন দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি সিস্টেমটি। একদিকে করোনা মহামারী অপরদিকে কর্মকর্তাদের বদলী। এই রদবদলেই স্থবির হয়ে পড়েছে বিট পুলিশিং কার্যক্রম। ফলোত পুলিশিং সেবা ব্যাহতসহ এলাকায় কিশোরদের অপরাধ-প্রবণতা বাড়ছে বলেও জানায় অনেকেই।
বিট পুলিশিং কার্যক্রম বন্ধের বিষয় নিয়ে কথা হয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামপুলিশের সাথে তিনি বলেন, বিট পুলিশিং শুরুর প্রথমে বেশ ভালোই চলছিলো। অফিসাররাও আসতেন এলাকার মানুষের ছোট ছোট অনেক বিষয়ে এই বিট পুলিশিং এর মধ্যে বিষয়গুলো খুব সহজেই সমাধান হয়ে যেত। থানায় যেতে হতো না। তবে এই বিট পুলিশিং কেন স্থবির হয়ে গেল তিনি তা জানেন না।
বিট পুলিশিং কার্যক্রম বিষয়ে শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ খাঁন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঢাকঢোল পিটিয়ে বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়। দুই তিন মাস বিট পুলিশিং কার্যক্রম চললেও এখন বন্ধ। প্রায় পাঁচ-ছয় মাসের বেশি কোনো কার্যক্রম চলে না। তবে এই বিট পুলিশিং কার্যক্রমের জন্য পরিষদে একটি কক্ষ কার্যক্রম পরিচালনায় হয়ে থাকলেও এখন তা পুরোপুরি তালাবদ্ধ রয়েছে । এতে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা ব্যাহত হচ্ছে বলেও তিনি বলেন।দ্রুতই বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালুর দাবীও জানান তিনি।
থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ মো. আশিকুর রহমান এর মুঠোফোনে বিট পুলিশিং কার্যক্রম বিষয়ে জানতে তিনি বলেন, এটা দুই একজনের অভিযোগ থাকতে পারে, কিন্তু একেবারে বন্ধ আছে এটা সত্য নয়। কোন কিছু শুরু করতে গেলে ঢাকঢোল পিটিয়ে মানুষকে জানানোর জন্য শুরু করা হয়েছিল। মূলত বিট পুলিশিং টা আগে কি জানতে হবে। মানুষের দোরগোড়ায় পুলিশিং সেবা পৌঁছে দেওয়াই বিট পুলিশিং এর লক্ষ্য।
তিনি বলেন বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালু আছে।
আমি নতুন যোগদান করেছি, একটু গুছিয়ে নিয়ে কার্যক্রম আগের মতো পুলিশিং সেবা পাবে। বিট পুলিশিং যেহেতু সরকারের মাননীয় আইজিপি মহোদয় চালু করেছে এটা অব্যশই চালু থাকবে, তিনি যোগ করেন।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি