জহির রায়হান সোহাগ,চুয়াডাঙ্গা/
ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করার ভয় দেখিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় দুটি বেকারির মালিকের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই দুই বেকারি মালিকদের কাছে ওই টাকা দাবি করা হয়। এর আগে ইউএনও পরিচয়ে আলমডাঙ্গা পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডের সাবেক দুই কাউন্সিলরের কাছ থেকে তাদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ইউএনও পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তি।
বিষয়টি সন্দেহ হলে আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আলমডাঙ্গা থানায় হাজির হন ওই দুই বেকারির মালিক। ওই ঘটনায় বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন মডার্ন বেকারির মালিক ফিরোজ রহমান মিলন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে প্রথমে আলমডাঙ্গা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর দিনেশ কুমারের কাছে ফোন দেয় ইউএনও পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে তার ওয়ার্ডের বেকারি মালিকদের মোবাইল নাম্বার জানতে চান ওই ব্যক্তি। সাবেক কাউন্সিলর দিনেশ কুমার মডার্ন বেকারি মালিক ফিরোজ রহমান মিলনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে দিনেশ ইউএনও’র ভ্রাম্যমাণ পরিচালনার বিষয়টি মিলনকে অবহিত করেন।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, এরপর ০১৭৬৫-৪৫৪১৪৮ নম্বর থেকে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইলিয়াছ হোসেনের কাছে একইরকমভাবে তার ওয়ার্ডের বেকারি মালিকের নম্বর চান ইউএনও পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তি। ইলিয়াস হোসেন ক্যানেলপাড়ার মনি ফুডের মালিক মনিরুজ্জামান মনির মোবাইল নম্বর দেন।
মডার্ন বেকারি মালিক ফিরোজ রহমান মিলন জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে ০১৬৬০-১৫১৩১১ মোবাইল ফোন নম্বর থেকে আমাকে ফোন দেন ইউএনও পরিচায়দানকারী ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আমি আলমডাঙ্গা থানার ইউএনও। ঢাকা থেকে ম্যাসেজ এসেছে। আলমডাঙ্গার সব বেকারিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করতে বলা হয়েছে। আমি র্যাবের একটি টিম নিয়ে অভিযান করবো। আমরা ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করছি। ‘ এসময় ইউএনও পরিচায়দানকারী আমাকে একটু সুযোগ দেয়ার কথা বলে জানান, ‘আপনি চাইলে কিছু কম টাকা দিয়ে আপনার নাম কাটিয়ে নিতে পারেন। আমার নম্বরে ৮ হাজার ২০০ টাকা বিকাশ করে দেন। ‘ এ সময় আমি পরদিন সকালের দিকে অফিসে গিয়ে টাকা দিয়ে আসার প্রস্তাব দিলে ইউএনও পরিচয়দানকারী ওই ব্যক্তি তা নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘এসব অফিসে আলোচনা করা যাবে না। এখনই বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিতে আদেশ দেন। ’
মনি ফুডের মালিক মনিরুজ্জামান মনি জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতে অতিরিক্ত জরিমানার ভয় দেখিয়ে আমার কাছেও টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে তখনই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলেও হুমকি দেন ইউএনও পরিচয়দানকারী। আমি সকাল পর্যন্ত সময় চাইলে ইউএনও পরিচয়দানকারী এখনই অভিযান চালানো হবে বলে জানান।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবীর বলেন, ইউএনও’র পরিচয় দিয়ে ফোন আসা মোবাইল নম্বরগুলো যাচাই বাছাই করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানার হুমকি প্রদানকারী ব্যক্তি ভুয়া ইউএনও বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। ভুয়া ইউএনওকে গ্রেফতার করতে মাঠে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মণ্ডল জানান, গতকাল রাতেই আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি