October 30, 2024, 8:03 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
নিখোঁজের তিনদিন পর কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রতিবেশীর রান্নাঘর থেকে আরাফত নামে দেড় বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার দাড়ের পাড়া গ্রামের ছপের মালের রান্নাঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
শিশু আরাফত ওই গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে। গত শুক্রবার (৭ মে) সকাল থেকে শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান ছপের মালের রান্নাঘর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে আশেপাশের লোকজন বিষয়টি ছপের মালের স্ক্রী কোহিনুরকে জিজ্ঞেস করতে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। জনগনের সন্দেহ হতে থাকলে কোহিনুর রান্নাঘরে পুঁতে রাখা বস্তাবন্দি মরদেহটি তুলে পুনরায় মাটি খুঁড়ে চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় প্রতিবেশীদের অনেকেই দেখে ফেলে। কোহিনুর এ সময় বাড়ি ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে কোহিনুরকে আটক করে।
আটক কোহিনুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহাদাৎ হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক কোহিনুর শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ওইদিন (শুক্রবার) কোহিনুর ভাত রান্না করে রান্নাঘরে ভাতের পাতিল রেখে দেন। এ সময় পাশের বাড়ির দেড় বছর বয়সী শিশু আরাফাত ভাতের পাতিলের ভেতর প্রসাব করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কোহিনুর শিশুটিকে সজোরে ধাক্কা দিলে সে ছিটকে পড়ে যায়। এক ধাক্কাতেই শিশুটি ছিটকে নিচে পড়ে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যায়। পরে তড়িঘড়ি করে লাশ বস্তাবন্দি করে রান্নাঘরের মেঝে খুঁড়ে পুঁতে রাখা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক কোহিনুর বেগম পুলিশকে এমন তথ্য জানালেও শিশু আরাফাত হত্যার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা আরো জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসবে বলে ওসি (তদন্ত) শাহাদাৎ হোসেন জানিয়েছেন। খবর লেখার সময় এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলেও জানান তিনি।
নিহত শিশু আরাফাতের বাড়িতে উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজ আহমেদ মামুন।
এ ঘটনার খবর পেয়ে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এজাজ আহমেদ মামুন তাৎক্ষণিক দাড়েরপাড়ায় শিশুটির বাড়িতে যান। এ সময় তিনি নিহত শিশুর শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন এবং একই সঙ্গে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।
গৃহবধূর লাশ উদ্ধার : অন্যদিকে দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রাম থেকে সোমবার দুপুরে মুক্তি খাতুন (২৩) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘরের ভেতর তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন দাবি করলেও পুলিশ ধারণা করছে, পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধু মুক্তিকে নির্যাতন করে হত্যার পর তা আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার মূল রহস্য বের করে আনা হবে বলে জানান পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহাদাৎ হোসেন। এক সন্তানের জননী নিহত মুক্তির স্বামী রিপন ঢাকায় গার্মেন্টসে কর্মরত রয়েছেন।
Leave a Reply