December 21, 2024, 10:16 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আরবি পড়ার সময় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। রমজান মাসে রোজা থেকে ওই শিক্ষক এই অপকর্ম করেন বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানিয়েছেন। তবে, অভিযুক্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি।
অভিযুক্ত ব্যক্তি পান্টি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের হেফাজতে ইসলামের এক সদস্য। তিনি ওই ওয়ার্ডের মৃত রব্বানের ছেলে মো. ইছাহক (৫৫)।
গত বৃহস্পতিবার সকালে এই ঘটনা ঘটিয়ে হুজুর সমাজপতিদের সহযোগীতায় পালিয়ে যান বলে ভুক্তভোগী শিশুর মা দাবি করেন। তিনি বলেন, আমার বাচ্চা প্রতিদিন সকালে আরবি পড়তে ইছাহক হুজুরের বাড়িতে যায়। কিন্তু হুজুরের বাড়িতে যেতে তার বাচ্চা মাঝে মাঝেই আপত্তি জানায়। ভেবেছিলাম পড়া ফাঁকি দেবার জন্য বাহানা করে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার পড়তে গিয়ে ফিরে এসে মেয়ে জানায় অনেক দিন ধরেই ইছাহক হুজুর তার শরীরের আপত্তিকর স্থানে হাত দেয়। ইতিপূর্বে ভয়ে বাড়িতে জানায়নি।
এরপর বিষয়টি শুনে তাতক্ষনিক হুজুরের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীকে জানান। স্ত্রী ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। সমাজপতি রহমত আলীর ছেলে আনিস বিকেলে ইছাহক হুজুরকে তাদের বাড়িতে নিয়ে এসে মাপ চাইতে বলে। বিষয়টি আর কাউকে না জানানোর জন্য ভয় দেখায় তারা। এই ভয়েই কাউকে জানাই নি- সাংবাদিকদের বলেন শিশুটির মা।
ভুক্তভোগী শিশু জানায়, পড়তে গেলে ইছাহক হুজুর খেজুর বা চকোলেট খেতে দেয়। বৃহস্পতিবার অন্যান্যদের আগেই ছুটি দিয়ে আমাকে বসতে বলে। পরে অন্য রুমে নিয়ে গায়ে হাত দেয়।
এ বিষয়ে সমাজপতি আনিছের স্ত্রী হাছিনা বলেন, আমার স্বামী আওয়ামী লীগ করে এবং এলাকার সমস্ত শালিসী বৈঠক করে। স্বামী ইছাহক হুজুরকে ভুক্তভোগীর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং মাপ চাওয়ায়। এ বিষয়টি এখানেই শেষ। তিনি আরো বলেন ইছাহক হুজুর হেফাজতে ইসলামের সদস্য, তিনি দুর্বল লোক না।
পান্টি ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. তাইজাল বিশ্বাস বলেন, শিশুর পরিবার ভয়ে কারোর কাছে যেতে পারছেনা। তিনি রোববার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানালে তার ওপরও চাপ আসছে। তিনি আরো বলেন সমাজপতি রহমত ও তার ছেলে আনিস ইছাহক হুজুরের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। তাইজাল বলেন, আরবী শেখানোর নামে ইসাহক রোজা রেখে এই অপকর্ম করেছে। তার কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
এবিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিব হাসান বলেন, আমরা ফেসবুক থেকে ঘটনা জানতে পারি। তবে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও স্থানীয় পান্টি পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মো. আতিককে ওই বাড়িতে পাঠানো হয়। অভয় দেয়ার পরও তারা অভিযোগ দিতে চাননি।
Leave a Reply