দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
৬ বছরের শিশুটি এখন আর কাঁদতে পারছে না। কাঁদতে কাঁদতে কান্না করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে, কন্ঠও বসে গেছে। এখন গলা দিয়ে শুধু হালকা আওয়াজ বের হচ্ছে ব্যাথার। তার মাথার পেছনে ঘাড়ের উপর-নিচ ও কানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে গিয়ে দগদগে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশুটির বেডের পাশেই বিলাপ করছে তার মা। শিশুটির নাম রাব্বি হোসেন। ডাক্তার জানান তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানা গেছে, একটি যাচ্ছেতাই অভিযোগ এনে তার উপর ফুটন্ত গরম ভাত ঢেলে দেয় তারই আপন বড় চাচা আব্দুর রশীদ। অভিযোগ মালয়েশিয়া প্রবাসী ভাইয়ের সাথে বিরোধের কারনে অবুঝ, নিরাপরাধ শিশুটির এ অবস্থা করেছে সে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় ভাংবাড়িয়া গ্রামে গত সোমবার সকালে এই নির্মম ঘটনাটি ঘটে।
শিশুটির মা রোমানা খাতুন জানান, সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রাব্বি বাড়ির মধ্যে অন্য শিশুদের সাথে খেলছিল। রাব্বির মা রোমানা খাতুন ভাত রান্না করছিলেন। এসময় পাশের একটি কক্ষে তার বড় চাচা ঘুমা”িছলেন। খেলতে থাকা শিশুদের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় রশিদের। রেগে গিয়ে চুলার উপর থেকে ফুটন্ত ভাতের হাড়ি নিয়ে রাব্বির মাথার উপর ঢেলে দেয় আব্দুর রশীদ। এতে রাব্বির মাথা, ঘাড় ও কানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে শারীরিক অব¯’ার উন্নতি না হওয়ায় তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বৃহস্পতিবার রাতে।
রোমানা জানান তার স্বামী লালু মিয়া ৬ বছর ধরে মালেশিয়ায় রয়েছেন। তিনি তার শশুর বাড়িতে থাকেন শিশু রাব্বিকে নিয়ে। পারবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লালুর সাথে তার বড় ভাই আব্দুর রশিদের বিরোধ চলছিল। মাঝে মধ্যে ছোটখাটো বিষয়ে রোমানা খাতুনের সাথেও ঝগড়া-ঝাটি চলে আসছিল। এইসব বিরোধের জের ধরেই রশিদ এ কাজ করেছে তার অভিযোগ।
তিনি মামলা করবেন বলে জানান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন জানান, শিশুটির অব¯স্থা আশঙ্কাজনক বলে মনে হচ্ছে তার কাছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির জানান, খুবই মর্মান্তিক। বিষয়টি একজন অফিসার পাঠিয়ে খোঁজ নিয়েছেন তিনি। এখনও ওই বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি শিশুটির পরিবার। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রশিদের কোন হদিস পাওয়া যায়নি সে পালিয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ওসি আলামগীর।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি