December 22, 2024, 6:59 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম ভড়ুয়াপাড়ায় ৮২ দিন পর একই স্টাইলে আরেকজন কৃষককে হত্যা করা হয়েছে। ১৭ এপ্রিল সকালে গ্রামের মাঠ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কৃষক নজির উদ্দিন ওরফে নাসিম উদ্দিনের (৫৯) মরদেহ। গত ২৫ জানুয়ারি সকালে একইভাবে পাওয়া গিয়েছিল কৃষক আমিরুল ইসলাম ওরফে সবুর (৪৫) এর মরদেহ। দুই জনকেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় এবং মরদেহ ফসলের জমিতে রাখা হয় উপুড় করে। সবুর হত্যা মামলার আসামির মিরাজ উদ্দিনের বাবা নজির উদ্দিন।
নিহতের ছেলে মিরাজ উদ্দিন বলেন, বাবা প্রায় দিনই ঘরের বাইরে পুকুর পাড়ে বাঁশের চরাটের উপর থাকতেন। গতকাল রাত ১২ টার দিকেও বাবা চরাটের উপর ছিলেন। আজ সকাল ৬ টার দিকে আমার চাচী শিউলী খাতুন জানান, বাবা রজব মোল্লার জমিতে ঘুমাচ্ছেন। বাড়ি থেকে সাড়ে তিনশ গজ দুরের (পশ্চিমে) গিয়ে দেখি বাবার হাত ও পা বাঁধা। উপর হয়ে পড়ে আছে। মিরাজ আরো বলেন, আমি একজন ভ্যানচালক। আগের সবুর হত্যা মামলার আমাকে আসামী করা হয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরেই আজ আমার বাবাকে হত্যা করা হলো।
পুলিশ গ্রামের মাদের মাঠে ফাঁকা আবাদি জমি থেকে নজির উদ্দিন ওরফে নাসিম উদ্দিন (৫৯) নামের ওই কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান, কুমারখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এলাকা আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার কথা বলেন ওসি।
কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের ভড়ুয়াপাড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক দ্বন্দ্ব লেগে আছে। এলাকাবাসী জানান, একপক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন গোলাম সরোয়ার। অন্যপক্ষে মো. বাবলু। এদের শত্রুতার জের ধরেই গত ২৫ জানুআরি বাবলু গ্রুপের সবুর নামের কৃষকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিজ বাড়ি থেকে এক হাজার গজ দূরে সরিষা ক্ষেতের পাশে উপুড় করে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায় তার মরদেহ। এ ঘটনার পর তার ছেলে বাদী হয়ে সরোয়ার গ্রুপ সমর্থিতদের আসামী করে মামলা করলে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে। এরমধ্যে ১৭ এপ্রিল সকাল ৬ টার দিকে সরোয়ার গ্রুপ সমর্থিত নজির উদ্দিন ও নাসিম উদ্দিনের মরদেহ পাওয়া গেল। এটি নিজ বাড়ি থেকে সাড়ে তিনশ গজ পশ্চিমে আবাদি জমিতে উপুড় করে রাখা ছিলো।
এদিকে ঘটনার পর প্রতিপক্ষের কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে সরোয়ার গ্রুপের সমর্থকরা। তবে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আতিকুল ইসলাম। তিনি গ্রামবাসীকে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের পথ পরিহার করার হুশিয়ারি দিয়েছেন। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Leave a Reply