জাহিদুজ্জামান/
যেখানে ভেঙে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়েছিল ভাস্কর্য কুষ্টিয়া শহরের সেই পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাস্কর্যের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হাতুরি দিয়ে ভেঙ্গে ক্ষতিসাধন করা ৭ই মার্চ এর ভাষণদানরত ভাষ্কর্য মেরামত হয়েছে। পরিকল্পনা মোতাবেক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অভিবাদন গ্রহণ এবং ৬দফা পাঠরত অবস্থার আরো দুটি ভাষ্কর্যই নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। বঙ্গবন্ধু জন্মদিনে এই ভাষ্কর্যের পাশে দাড়িয়ে পড়ছেন মানুষ। দেখছেন, শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাব্বির মোহাম্মদ কাদেরী সবু বলেন, এই ভাষ্কর্য আামাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের। তিনি বলেন, আমার পরিচয় দেয়া এখন সহজ এবং গর্বের হয়ে গেছে যে- বঙ্গবন্ধু চত্বরে আমার বাসা। এতে আমাদের লাইফ স্টাইলও উন্নত হয়ে গেছে। যতবার বাড়ি থেকে বের হই বঙ্গবন্ধুকে দেখি। আজকের দিনে তার জন্মদিনে ভাষ্কর্যের সামনে দাড়িয়ে শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জানিয়েছি। জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক ও সাংবাদিক ড. আমানুর আমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষ্কর্য নির্মানের পর থেকে শহরের সৌন্দর্য এবং ভাবগাম্ভীর্ষ বেড়ে গেছে। তিনি কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়রকে এ জন্য ধন্যবাদ জানান। বলেন, এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কুষ্টিয়া ডিসি কোর্ট চত্বরে বঙ্গবন্ধুর আরেকটি ভাষ্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শেণি পেশার মানুষ।
মজমপুর গেট এলাকা থেকে কুষ্টিয়া শহরের দিকে কিছুদূর গেলেই পাঁচ রাস্তার মোড়। ব্যস্ত এই মোড়েই বসানো হয়েছে বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাষ্কর্য। শহরের দিকে যেতেই সামনে পড়ছে ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি। এই ভাষ্কর্যটিই প্রথমে বসানো হয়। গত ৫ ডিসেম্বর রাতের আধারে এর মুখায়ব এবং তর্জনি ভেঙ্গে ফেলেন দুই মাদ্রাসাছাত্র। এরপর দেশব্যাপী আলোচিত হয়। এটি মেরামত করা হয়েছে। এর নিচে রয়েছে ৭ই মার্চের সেই চিরন্তনী ঘোষণা এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম... জয় বাংলা। পাথরে খোদাই করে এই ঘোষণা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এর ডানপাশে বসানো হয়েছে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, আবুল হাসনাত মো: কামারুজ্জামান ও মো: মনসুর আলী’র প্রতিকৃতি। তার নিচে খোদাই করে লেখা জাতীয় চারনেতা ‘সেই রক্তের ঋণ কোনদিন ভুলবো না সেই অবদান।
তেমনি থানা মোড় থেকে যারা পাঁচ রাস্তার দিকে আসছেন তাদের চোখে পড়ছে সবচেয়ে উচু ভাষ্কর্য বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় অভিবাদনের জবাব দেয়ার প্রতিকৃতি। এর পাদদেশে বসানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু ছোট আকারের আরেকটি প্রতিকৃতি। সেখানে দেখানো হয়েছে ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু।
মূল তিনটি ভাষ্কর্ষের আরেকটি গড়াই নদীর দিকে মুখ করা। এই ভাষ্কর্যে বঙ্গবন্ধুর ৬দফা পাঠরত অবস্থার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এর পাাদদেশে ৬দফা আন্দোলনের নানা প্লাকার্ড সম্বলিত দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পুরো ভাষ্কর্যটি নান্দনিক লোহার খুটি এবং চেইন দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
কুষ্টিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান আনোয়ার আলী বলেছেন, মাচের প্রথম সপ্তাহে ভাষ্কর্য নির্মাণের সব কাজ শেষ হয়েছে। এখন আমরা উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষায় আছি। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছি। সেই মর্মে আমরা আবেদন করেছি।
কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রধান প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, মুজিব জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর তিনটি ভাষ্কর্য বসানো সিদ্ধান্ত নেয় কুষ্টিয়া পৌরসভা। সে অনুযায়ী দরপত্রের মাধ্যমে ৩০লাখ টাকার এই কাজ পান ভাষ্কর মাহবুব জামাল শামীম। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তাকে সাইট বুঝিয়ে দেয়া হয়। লক্ষ্য ছিলো মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন করা হবে। ১৩ই নভেম্বর শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর প্রথম ভাষ্কর্য ৭ই মার্চের ভাষণের প্রতিকৃতি বসানোর কাজ। প্রথমটি বসানোর কাজ যখন শেষের দিকে ৫ডিসেম্বর রাতের আঁধারে হাতুরি দিয়ে ভেঙ্গে এর ক্ষতিসাধন করে দুই মাদ্রাসা ছাত্র। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত ভাষ্কর্য ওই অবস্থায় রেখে বাকী দুটি ভাষ্কর্য বসানোর কাজ শুরু হয়। একই সঙ্গে ক্ষতি সাধন করা ৭ইি মার্চের ভাষণের ভাষ্কর্যটিও মেরামত করেন ভাষ্কর মাহবুব জামাল শামীম।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি