দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, চুয়াডাঙ্গা/
‘ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে’ আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের এমন বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ঘটনায় আলমডাঙ্গা পৌর নির্বাচনের আওয়ামীলীগ মনোনিত মেয়র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
বুধবার রাতে ওই নোটিশ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তারেক আহমেদ। বৃহস্পতিবার নির্বাচন অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনার সমর্থনে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন “ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে। স্যান্টারে (কেন্দ্রে) যায়ে ভোট হবে না”সংক্রান্ত বক্তব্য রাখেন। সামাজিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপের উদ্ধৃতি দিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে বলা হয়, ওই অনুষ্ঠানে আপনি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনকালীন এ ধরনের সভা সমাবেশ আয়োজন পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৫–এর স্পষ্ট লঙ্ঘনের শামিল। নির্বাচনকালীন সময়ে আপনার উপস্থিতি এবং নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের ন্যক্কারজনক বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও ভিডিও ক্লিপের বিষয় ১১ ফেব্রুয়ারি অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করতে বলা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেদ জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। ওই ধরণের সভা সমাবেশের আয়োজন করায় পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা লঙ্ঘন করেছে তারা। যেহেতু সভায় মেয়র পদপ্রার্থী হাসান কাদির উপস্থিত ছিলেন, তাই এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী কাছে ব্যাখা চাওয়া হয়েছে। আজ দুপুর পর্যন্ত এখনও নোটিশের জবাব পাওয়া যায়নি।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি এক সমাবেশে আলমডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনের দেয়া বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডর ভিডিওতে তাকে রাতে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট করার কৌশল শেখাতে দেখা যায়। ‘ভোট করার কায়দা আছে, অনেক কায়দা আছে। ভোট আগে থাকতি কইরে ফেলতি হবে। স্যান্টারে (কেন্দ্রে) যায়ে ভোট হবে না।’ এটা বিএনপির লোক, এটা জামায়াতের লোক। আমি ওই লোককে ব্যারিকেড দিয়ে ভোট আটকে দেব। আমরা নৌকাকে ভোট দিয়ে দেব। তাহলে কী হবে জানেন? বিএনপি-জামায়াতের যারা, ভোট দিতে যাতি পাইরল না, আমাদের যে ৫০০ ভোট, ৫০০ ভোটই থেকে গেল। ভোটে অনেক কৌশল আছে। কৌশলগতভাবে আগালে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।’ ভিডিওতে তার দেয়া এমন বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ বিষয়ে নির্বাচনের অপর দুই প্রার্থী বিএনপির মেয়র প্রার্থী মীর মহিউদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সবেদ আলী (মোবাইল ফোন) বলেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ব্যাপারে প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। তাই রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তারা কোন অভিযোগ করেননি।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বর্তমান মেয়র হাসান কাদির (নৌকা), জেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাবেক মেয়র মীর মহিউদ্দিন (ধানের শীষ) ও জেলা জাসদের (ইনু) সভাপতি সবেদ আলী (মোবাইল ফোন)। এছাড়া ১০ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি