December 30, 2024, 9:53 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, রাবি/
খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে দুইজন শিক্ষার্থী বহিষ্কার ও দুইজন শিক্ষককে অপসারণ এবং একজনকে বরখাস্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মুখে কালো কাঁপড় বেঁধে মানববন্ধন ও মৌন মিছিল করা হয়।
বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২ টায় খুবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিহিংসামূলক শাস্তি দেওয়া হয়েছে দাবি করে দ্রুত প্রত্যাহার ও খুবি প্রশাসনের দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবি ফলক চত্বরের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোাগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের আইন অনুসারে ওই বিশ^বিদ্যালয়ে যা চলছে তা চলার কথা না। কিন্তু খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে এমন একটা আইন করা হয়েছে সেখানে উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্যের বাইরে অন্য কিছু করার উপায় নেই। শিক্ষকদেরকে বহিস্কার করা ও ছাত্রদেরকে বাদ দেওয়ার বিধান ওখানে আছে। খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের আইন ১৯৯০ সালের। তাতে চাইলেই বাদ দিতে পারে। ভিসির প্রশাসনিক স্বৈরতন্ত্র এটা সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনগত ভাবেই আছে। বিশ^বিদ্যালয়ের সিনেট সিন্ডিকেট নির্বাচন এটা আইনেই আছে। কিন্তু এটা বিশ^বিদ্যালয়কে হেল্প করে না।
এসময় ‘বহিষ্কার হোক দুর্নীতিবাজরা, ন্যয়ের পক্ষ্যে কথা বলা ব্যক্তি নয়’, বিশ^বিদ্যালয় হোক মুক্ত জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন বরাবরই ন্যায়সঙ্গত, উপাচার্যের অন্ধকার মন আলোয় ভরে উঠুক, ইঁদুর-বিড়াল খেলা এবার থামাও নইলে পস্তাতে হবে, বাক স্বাধীনতা মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাকসহ নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাড়িয়েছিলেন অংশগ্রহণকারীরা।
এছাড়া আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার ও অপসারনের আদেশ প্রত্যাহরের দাবি জানান সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষক ও অভিভাবক বৃন্দ।
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম কনকের সঞ্চালনায় এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবদিকতা বিভাগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহিল বাকি, ফোকলোর বিভাগের সুস্মিতা, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সফিকুন্নবী সামাদী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি বখতিয়ার আহমেদ, বাংলা বিভাগের সভাপতি সুজিত কুমার সরকার, অভিভাবক মাহমুদ জামান কাদেরী, নূর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ১১ টার মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম হোসেন রানার সঞ্চালনায় বিশ^বিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার রানা বলেন, আমরা চারদিন আগে খুবিতে তিনজন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার দিন মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছিলাম। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম তাদেরকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের আশঙ্কা সত্য করে দ্ইুজন শিক্ষককে অপসারণ করা হয়েছে এবং একজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানচ্ছি। আজ এটি আমাদের অস্তিত্ব ও বিশ^বিদ্যালয়ের স্বাধীনতার প্রশ্ন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক যতদিন পর্যন্ত না তাদের স্বপদে ফিরে যাচ্ছেন ততদিন পর্যন্ত পুরো দেশের প্রত্যেকটি বিশ^বিদ্যালয়ে আন্দোলন অব্যহত থাকবে। বিশ^বিদ্যালয় চলে জনগনের টাকায়, সেই বেতনে ভিসি-গিরি করে যেকোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের বরখাস্ত করবেন তা মেনে নেয়া যায় না।
বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে আবাসন সুবিধা নিশ্চিতের মত নায্য দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছিল শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় দুজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে সংহতি জানানোয় দুজন শিক্ষককে অপসারণ ও একজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। খুবি প্রশাসনের স্বৈরাচারী এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যখন দেশব্যাপী প্রতিবাদ গড়ে উঠেছে তখন তা স্তিমিত করতে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আশ^াস দেয় খুবি প্রশাসন। খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কার এবং শিক্ষকদের অপসারণ ও বহিষ্কারাদেশ চূড়ান্তভাবে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন, রবিউল ইসলাম রুবেল এবং সাবেক শিক্ষার্থী হাসিব রনি। মানববন্ধন শেষে একটি মৌন মিছিলে যুক্ত হন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
Leave a Reply