দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে টিকা ;েয়ার রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে। ফেব্রæয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে জাতীয়ভাবে টিকা দেওয়া শুরু হবে। ২৫ লাখ নয়, প্রথম দফায় দেশে করোনার টিকা দেওয়া হবে ৫০ লাখ মানুষকে।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ পরিকল্পনা শীর্ষক এই পরিকল্পনাতে রয়েছে ১৮ বছরের নিচে এবং গর্ভবতী নারী ও ৩৭ শতাংশ জনগোষ্ঠী ১৮ বছরের কম বয়সী, তাদেরও টিকা দেওয়া হবে না। কারণ, তাদের কোনও ট্রায়াল হয়নি।স্বাস্থ্য অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালসহগুলোতে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য আলাদা টিম গঠন করা হচ্ছে। এছাড়া কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতালে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।
আগে পরিকল্পনা ছিল ৫০ লাখ টিকা প্রথম মাসে ২৫ লাখ মানুষকে দিয়ে বাকীটা দ্বিতীয় ডোজের জন্য রেখে দেওয়া হবে। কিন্তু পরিকল্পনার পরিবর্তনের কারনে প্রথম মাসেই একসঙ্গে ৫০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। তাই প্রথম যে ৫০ লাখ টিকা আসবে তা দিয়ে দেওয়া হবে। দুই মাসের মধ্যে আরও টিকা চলে আসবে। ভ্যাকসিন নিতে পুরো নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনলাইনে হবে, এখনও সে বিষয়ক প্রস্তুতি চলছে। এখানে জাতীয় পরিচয় পত্র আবশ্যক। একইসঙ্গে ভাকসিন নেওয়ার পর সনদ দেওয়া হবে।
নিবন্ধনের পর আবেদনকারীকে এসএমএস এর মাধ্যমে স্থান ও সময় বলে দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সাড়ে সাত হাজার কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। প্রথম ধাপে ৮০ বছরের বেশি বয়সী আর স্বাস্থ্যকর্মীরা ভ্যাকসিন পাবেন। পরের ধাপে ৭০ বছরের বেশি বয়সীরা পাবেন। ফাইজারের টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৪ লাখ সম্মুখসারির মানুষকে ফাইজারের টিকা দিতে হবে। শুক্রবার চিঠি পেয়েছি। ১৮ জানুয়ারির মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলেছে কোভ্যাক্স। ভ্যাকসিন দিতে সারা দেশে ৭ হাজার ৩৪৪ টি টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিমে ৬ জন করে সদস্য থাকবেন।
কীভাবে বিতরণ হবে টিকা//
তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠীকে ৮ সপ্তাহ ব্যবধানে (১ম ডোজের ৮ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ) ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিকদের ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। কেউ যদি ২ ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণে ইচ্ছুক হন তবে তাকে অবশ্যই ২ ডোজের মধ্যবর্তী সময়ের ব্যবধান নির্ধারিত ৮ সপ্তাহ দেশে অবস্থান করতে হবে। এক্ষেত্রে তাকে বৈধ কাগজপত্রাদি (পাসপোর্ট, ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি) দাখিল করতে হবে।
ভ্যাকসিন পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রদানের সময়ে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দেশের পুলিশ বাহিনী সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। ভ্যাকসিন বিষয়ক সরকারি প্রচার-প্রচারণা নিশ্চিত করতে তথ্য মন্ত্রণালয়কে সাবির্ক দায়িত্ব পালন করবে।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইন নিবন্ধন, ভ্যাকসিন কার্ড, সম্মতিপত্র, ভ্যাকসিন সনদ প্রদানে আইসিটি বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক‘ সুরক্ষা ওয়েবসাইট’ প্রস্তুত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৈরি করা ভ্যাকসিন পাবার তালিকাতে ফেজ-১ এর এ-তে থাকছেন ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী। অর্থাৎ এক কোটি ৫০ লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে কোডিভ-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত সকল সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, তাদের সংখ্যা চার লাখ ৫২ হাজার ২৭ জন। প্রথম মাসেই তারা ভ্যাকসিন পাবেন।
কোডিভ-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত সকল অনুমোদিত বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ৬ লাখ। প্রথম মাসেই তারা ভ্যাকসিন পাবেন। বীরমুক্তিযোদ্ধ ২ লাখ ১০ হাজার। তারাও প্রথম মাসে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন। সম্মুখ সারির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬১৯ জন। প্রথম মাসে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩১০ জন এবং ২য় মাসে সমান সংখ্যক সদস্য ভ্যাকসিন পাবেন। সামরিক ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯১৩ জন। প্রথম মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ৪৫৭ জন এবং ২য় মাসে সমান সংখ্যক সদস্য টিকা পাবেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য কার্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৫০ হাজার। প্রথম মাসে পাবেন ২৫ হাজার এবং ২য় মাসে পাবেন ২৫ হাজার। সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী ৫০ হাজার। প্রথম মাসে ২৫ হাজার এবং ২য় মাসে ২৫ হাজার ভ্যাকসিন পাবেন। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৯৮ জন। প্রথম মাসে ৮৯ হাজার ১৪৯ জন এবং ২য় মাসে সমান সংখ্যক জনপ্রতিনিধি ভ্যাকসিন পাবেন।
সিটি কপোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মচারী ১ লাখ ৫০ হাজার। প্রথম মাসে ৭৫ হাজার এবং ২য় মাসে সমান সংখ্যক কর্মচারী ভ্যাকসিন পাবেন। ধর্মীয় প্রতিনিধির সংখ্যা ৫ লাখ ৪১ হাজার। ২য় মাসে ২ লাখ ৭০ হাজার ৫০০ জন এবং ৫ম মাসে সমান সংখ্যক ধর্মীয় প্রতিনিধিররা ভ্যাকসিন পাবেন।
মৃতদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি ৭৫ হাজার। তাদের মধ্যে প্রথম মাসে ৩৭ হাজার ৫০০ জন এবং ২য় মাসে সমান সংখ্যক ব্যক্তি ভ্যাকসিন পাবেন। জরুরি পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ফায়ার সার্ভিস ও পরিবহন কর্মচারী রয়েছেন চার লাখ। তাদের মধ্যে প্রথম মাসে ২ লাখ এবং ২য় মাসে সমান সংখ্যক ভ্যাকসিন পাবেন।
স্থল, নৌ ও বিমান বন্দর কর্মী ১ লাখ ৫০ হাজার। প্রথম মাসে ৭৫ হাজার এবং ২য় মাসে ৭৫ হাজার ভ্যাকসিন পাবেন। প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক ১ লাখ ২০ হাজার। তাদের মধ্যে প্রথম মাসে ৬০ হাজার এবং ২য় মাসে সমাস সংখ্যক টিকা পাবেন।
জেলা ও উপজেলাসমূহে জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মচারী ৪ লাখের মধ্যে প্রথম মাসে ২ লাখ এবং ২য় মাসে ২ লাখ টিকা পাবেন। ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারী ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬২১ জন। ২য় মাসে ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারী সবাইকে টিকা দেওয়া হবে।
স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জনগোষ্ঠী(যক্ষ্মা, এইডস রোগী, ক্যান্সার রোগী) ৬ লাখ ২৫ হাজার। এদিকে ৮০ বছরের উপরে ১৩ লাখ ১২ হাজার ৯৭৩ জন। এই বয়সের সবাই প্রথম মাসে ভ্যাকসিন পাবেন। ৭৭ থেকে ৭৯ বছরের ১১ লাখ ৩ হাজার ৬৫৩ জন। এই বয়সের জনগোষ্ঠীও প্রথম মাসে ভ্যাকসিন পাবেন।
৭৪ থেকে ৭৬ বছরের জনসংখ্যা ৯ লাখ ৫৩ হাজার ১৫৩ জন। ২য় মাসে এই বয়সের সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। ৭০ থেকে ৭৩ বছরের জনসংখ্যা ধরা হয়েছে ২০ লাখ ৬ হাজার ৮৭৯ জন। ২য় মাসে এই বয়সের সবাইকে টিকা দেয়া হবে। ৬৭ থেকে ৬৯ বছরের জনসংখ্যা ২৪ লাখ ৭৫ হাজার। ৫ম মাসে এই বয়সের ২২ লাখ ৪ হাজার ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। ৬৪ থেকে ৬৬ বছরের জনসংখ্যা ২৪ লাখ ৭৫ হাজার। ৫ম মাসে এই বয়সের মানুষ টিকা পাবেন।
জাতীয় দলের খেলোয়াড় (ফুটবল, ক্রিকেট, হকি ইত্যাদি) ২১ হাজার ৮৬৩ জন। প্রথম মাসে ১০ হাজার ৯৩২ জন এবং ২য় মাসে সমান সংখ্যক ভ্যাকসিন পাবেন।
বাফার, ইমার্জেন্সি ও আউটব্রেক প্রথম মাসে ৭০ হাজার, ২য় মাসে ৫০ হাজার এবং ৫ম মাসে ৫০ হাজার জন ভ্যাকসিন পাবেন।
মোট দেড় কোটি লোকের প্রথম মাসে ৫০ লাখ, ২য় মাসে ৫০ লাখ এবং ৫ম মাসে ৫০ লাখ টিকা পাচ্ছেন।
কোথায় ভ্যাকসিন কেন্দ্র
ভ্যাকসিন কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা/ সদর হাসপাতাল, সরকারি, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ, বিজিবি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল।
টিকা রাখার জন্য দেশের ৬৪ জেলায় ইপিআই স্টোর রয়েছে, যেখানে ভ্যাকসিন রাখা হবে। আর এ টিকাদান কর্মসূচিতে কাজ করবে ৭ হাজার ৩৪৪টি দল। ভ্যাকসিন দেবেন ২ জনে( নার্স, স্যাকমো বা মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট)। তাদের সহযোগিতা করবেন স্বেচ্ছাসেবক ৪জন।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি