ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বাসভবনে কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) সভাপতি ও আল হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে দেশের ১২ জন শীর্ষস্থানীয় আলেম একসঙ্গে মতবিনিময়ের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমরা যেসব আলাপ করেছি, এগুলো নিয়ে আরও আলাপ হবে। আমরা মনে করি, আলাপের মাধ্যমে আমরা সব সমস্যার সমাধান করব। আমরা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারব। তিনি বলেন যেসব কথাবার্তা তাদের আলাপের মাধ্যমে বেরিয়ে আসছে, সেগুলোর সবই আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। তারাও হৃদয় দিয়ে ধারণ করেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি আমাদের জাতির পিতাকে। তারাও স্বীকার করেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন খাঁটি মুসলমান, তার ঈমানি দায়িত্ব যেগুলো সেগুলো তিনি পালন করে যাচ্ছেন।’ সর্বশেষ তিনি বলেন আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত দেব না। আমরা আলোচনার মাধ্যমে শেষ করব। ভাস্কর্য যেখানে যেভাবে আছে সেভাবে থাকবে কি থাকবে না, আমরা সবগুলো নিয়ে আলোচনা করছি।’
আমরা বলেছি আলোচনার মাধ্যমে শেষ করব। সেখানে ভাস্কর্য থাকবে না- এটা আমি কখনও বলিনি। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এগুলো শেষ করব। আমি স্পষ্ট করে বলছি, কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি যে ভাস্কর্য ওখানে থাকবে না, ওখান থেকে সরিয়ে দেব। কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এই জায়গায় অন্য কিছু হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ তার ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন মৌলবাদীদের সাথে কোন আপোসের সুযোগ নেই। হানিফ একেবারে শুরু থেকেই এই ধর্ম ব্যবসায়ী, ধর্মের অপব্যখ্যাকারী সাম্প্রদায়িক এই গোষ্ঠীটির তীব্র সমালোচনা করে আসছেন। তিনি ধর্মের নামে অপরাজনীতি রাজনীতি করা এই অপ্রয়োজনীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উচচকন্ঠ হয়ে জাতিকে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের ভিত্তিকে তুলে ধরছেন। তাঁর ফেস বুক পেজ থেকে নেয়া বক্তব্যটি হুবুহু তলে ধরা হলো : শান্তির জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার অংশ হিসেবে আলোচনা হতে পারে, তবে দল হিসেবে মৌলবাদী জঙ্গিবাদীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আপোসের কোন সুযোগ নেই। তাদের কোন দাবি মানতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে সংবিধান নিয়ে কথা ওঠে, পতাকা নিয়ে কথা ওঠে। ধর্মের দোহাই দিয়ে অপব্যাখ্যা করে স্বাধীনতাবিরোধীরা সংবিধানের উপর আঘাত হানছে। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, রাজাকারদের আস্ফালন শোনার জন্য নয়। সংবিধানের উপর কালিমা লেপন হয় এ রকম কোন দাবি মেনে নেয়া হবে না।
ভাস্কর্য নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে। বিশ্বের বহু মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে। ওয়াজ মাহফিলের নামে রং তামাশা করে এক শ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ীরা। ওয়াজ মাহফিলের নামে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বোকা বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।
আজ তারা (ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীরা) ইসলামের নাম করে যে ভাষায় কথা বলছে, এর মধ্যে কোন শান্তির চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়? যে ভাষায় কথা বলছেন, এদের মধ্যে কোন সভ্যতা খুঁজে পাওয়া যায়? তারা উগ্র সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদী ধরনের কথাবার্তা বলছেন।’
প্রত্যেক মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে জানিয়ে মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। ইসলাম শান্তির ধর্ম। মৌলবাদীরা উগ্র, সন্ত্রাস, জঙ্গিদের মতো কথা বলছে। প্রত্যেক মাদ্রাসায় সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হবে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে।
নবী করিম (সা.) কখনো ছবি ওঠাননি, আপনারা কেন ছবি ওঠান? এরা (ধর্মের অপব্যাখাকারীরা) কথায় কথায় হাদিসের দোহাই দেয়, নবী করিম (সা.) এটা করেননি, ওটা করেননি। নবী (সা.) কোনোদিন প্লেনে ওঠেননি, আপনারা কেন ওঠেন? উনি তো গাড়িতে ওঠেননি, আপনারা কেন ওঠেন? ইসলাম কখনোই এ কথা বলেনি। ইসলাম হচ্ছে যুগোপযোগী ধর্ম।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট, শিক্ষক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায়।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি