দৈনিক কষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও ভাঙচুরের ঘটনার মামলায় গ্রেফতার দুই মাদ্রাসা ছাত্র আবু বকর মিঠুন, ১৮ ও সবুজ ইসলাম নাহিদ, ২০ কে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী রের্কড শেষে তাদেরকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে ৩ ঘন্টার জবানবন্দীতে সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ বলেছে, ওয়াজ শুনতে তার ভাল লাগে। বেশি ভাল লাগে ফয়জুল করিম ও মামুনুল হকের ওয়াজ। কিছুদিন হলো ভাষ্কর্য নিয়ে তাদের দেয়া বয়ান শুনে আসছিল তারা।
তারা জানায় গত ৩ ডিসেম্বর মাদ্রাসার শিক্ষক ইউসুফ আলী ও সহপাঠী আবু বক্করের সঙ্গে শীতের পোশাক কিনতে কুষ্টিয়া শহরে আসে তারা। মাদ্রাসায় ফেরার পথে পাঁচ রাস্তার মোড় হয়ে মাদ্রাসায় ফেরে তারা। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য দেখে তারা। পরদিন শুক্রবার মাদ্রাসা মসজিদে মুর্তি/ভাষ্কর্য সম্পর্কে বয়ান শুনেছিল তারা। সখানে ইমাম ছিলেন ইবনি মাসউদ মাদ্রাসার নাজিমে তালিমা (দ্বিতীয় শিক্ষক) মাওলানা এবাদুর রহমান। তিনি মূর্তি/ভাষ্কর্য এর ইতিহাস এবং ইসলামে অবৈধ বলে বয়ান দেন। তিনি বয়ানে বলেন, কুষ্টিয়ায় পাঁচ রাস্তার মোড়ে শাপলার পরিবর্তে মুর্তি বসানো হয়েছে।
“নামাজ থেকে যাওয়ার পথে আমি আর আবু বক্কর পাঁচ রাস্তার মোড়ের মূর্তিটি ভেঙ্গে ফেলবো বলে আলোচনা করি এবং মাদ্রাসার নির্মাণাধীন মসজিদ থেকে দুটি হাতুরি নিয়ে দুজন রাতে ভাঙতে বের হই। হেটে এসে হাতুরি দিয়ে ভেঙে ফেলি।”
স্বীকারোক্তিতে অপর ছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুনও এই কথা বলেছে। তারা জানায় সকালে মাদ্রাসার শিক্ষকরা (আল-আমিন ও ইউসুফ আলী ) তাদেরকে পালিয়ে বাড়িতে যেতে বলে।
গ্রেফতার চারজনের মধ্যে দুই শিক্ষক আল-আমিন ও ইউসুফ আলী আগের দিন শনিবার একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। চার দিনের পুলিশ রিমান্ড শেষ হওয়ায় বিচারক তাদের শনিবার সন্ধ্যায় কারাগারে প্রেরণ করেন।
কুষ্টিয়া শহরতলীর জুগিয়া মাদার শাহ পশ্চিম পাড়ার মাদ্রাসা ইবনি মাসউদের হেফজ বিভাগের দুই ছাত্র মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠুন (১৯) এবং মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)। রবিবার দুপুর সোয়া ২টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাদের আদালতে আনা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৫ ডিসেম্বর রাত ২টার পরে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া পৌরসভার সচিব কামাল উদ্দিন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় গত ৭ ডিসেম্বর ইবনি মাসউদ মাদ্রাসার হেফজ শাখার দুই ছাত্র ও দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ৮ তারিখে পুলিশের আবেদনে চার আসামীর মধ্যে দুই মাদ্রাসা ছাত্রের ৫ দিন করে ও দুই মাদ্রাসা শিক্ষককে ৪ দিনের পুলিশ রিমান্ড দেন আদালত। ৯ তারিখ থেকে এদের রিমান্ড শুর“ হয়।
পুলিশের একটি সুত্র জানায় তারা পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় বিষয়টি স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে দুজন জানায় তারা মওলানা মামুনুল হক ও মওলানা ফয়জুল হকের ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্য থেকেই উদ্বুব্ধ হয়ে এ কাজ করেছে। তারা দুজনেই এই পরিকল্পনা বানায় বলে জানায়।
সন্ধ্যায় এব প্রশ্নের জবাবে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত জানান মওলানা মামুনুল হক ও মওলানা ফয়জুল হককে এই মামলায় আসামী করা হবে কিনা সেটা আরো তদন্ত সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি