October 30, 2024, 8:02 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, চুয়াডাঙ্গা/ স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে নবাবের নাতি পরিচয়দানকারী আলী হাসান আসকারী ও তার স্ত্রীসহ তিনজনের নামে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গেল সোমবার রাতে আসকারীর স্ত্রী মেরিনা আক্তার হেনা আসকারীর নিকটাত্মীয় দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর রাত ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে দ্বিতীয় আসামী আসকারীর শ্যালক রায়হান উদ্দীন জনিকে শহরের কোর্ট রোড থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন জানাতে পারেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নাতি পরিচয় দিয়ে আলী হাসান আসকারী চাকরী দেয়ার প্রলোভন দেখায়। গত ২০১৮ সালের ২৩ মে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরী দেয়ার নাম করে তিন দফায় ব্যাংক ও নগদে ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক আসকারী। এরপর চাকরী দিতে না পারলে তার সাথে যোগযোগ করলে সে নানা টালবাহানা করতে থাকে। তার সাথে প্রতারণায় অংশ নেয় তার স্ত্রী মেরিনা আক্তার হেনা আসকারিসহ আরও কয়েকজন। পরে চলতি বছরের ২৯ অক্টোবর আসকারিকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। তখন তার প্রতারণার নানান চিত্র ফুটে উঠে গণমাধ্যমে। মাথায় হাত ওঠে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের সহিদুল ইসলামের ছেলে রফিকুল ইসলামের। কারণ, তিনিও প্রতারিত হয়েছেন। রফিকুল ইসলামের বোনকে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার নাম করে তিন দফায় মোট ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক আসকারী।
মামলার বাদী রফিকুল ইসলামের অভিযোগ করে বলেন, মেরিনা আক্তার হেনা আমার নিকটাত্মীয়। আমার বোনের চাকরির জন্য চেষ্টা করতে থাকি। মেরিনা আক্তার হেনা বলেন, তার স্বামী নবাব পরিবারের ছেলে। দেশের সরকারি সব দফতরেই স্বামী আসকারীর হাত রয়েছে। সহজেই চাকির দিতে পারবে। এরপর চাকরির জন্য টাকা দিতে হবে বলে জানায় আসকারী, হেনা ও হেনার ভাই জনি। স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রথমে নগদ ৭ লাখ টাকা নেন আসকারী। ওই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমেই দেয়া হয়। পরে দু’দফায় মেরিনা ও জনির হাতে আরও ৬ লাখ টাকা দেয়া হয়। টাকা নিয়েও চাকরি দিতে না পেরে দিনের পর দিন ঘোরাতে তারা।
তিনি আরও জানান, কথিত নবাব পরিচয় দিয়ে আলী হাসান আসকারী নিজেকে প্রভাবশালী দাবী করে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার একাধিক স্ত্রী রয়েছে। স্ত্রীদের মধ্যে একজনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা শহরে। সেই সুযোগে সে চুয়াডাঙ্গা শহরেও প্রতারণার জাল ছড়িয়েছিলো।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, আসকারি ও তার স্ত্রী-শ্যালকসহ তিনজনের নামে প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার ২নং আসামী ও আসকারির শ্যালক রায়হান উদ্দীন জনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। রিমান্ড চেয়ে আবেদনও করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
Leave a Reply