December 22, 2024, 12:59 am
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কুষ্টিয়াসহ ২১ জেলায় শনিবারের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পেছনে ছিল ল্যুপ (তারের ফাঁচ) ছিঁড়ে যাওয়া। বিদ্যুতের জাতীয় সঞ্চালন লাইনের ঈশ^রদী উপকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এতে আড়াই ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল পাঁচ জেলা। শনিবার সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না এই জেলাগ্রলোতে।
ওজোপাডিকো লি. কুষ্টিয়ার বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রণব দেবনাথ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, জাতীয় গ্রিডের ঈশ্বরদী সাবস্টেশনে বড় ধরনের গোলযোগের কারণে গতকাল শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে দেশের পশ্চিম জোনের ২১টি জেলায় একযোগে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ এবং ফরিদপুর অঞ্চল মিলে ২১টি জেলার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষ দিনভরই বিদ্যুৎ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে ছিল। এ গোলযোগের কারণে বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা, ভোলা, ভেড়ামাড়া ও পায়রাতাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলো উৎপাদন ইউনিট একযোগে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হয় দেশের পশ্চিম জোনের বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায়। বিদ্যুতের এ বিপর্যয়ের কারণে একুশ জেলার শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায়ও চরম সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিম জোনের উৎপাদন ইউনিটগুলো চালু করতে না পারায় দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। ভাদ্রের প্রায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গরমে অস্বাভাবিক লোডশেডিং-এ জনজীবন বিপর্যস্ত ছিল দুপুর পর্যন্ত। পশ্চিম জোনে প্রায় ১২শ’ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে দুপুর ২টা পর্যন্ত সরবরাহ ছিল ৫শ’ মেগাওয়াটেরও মত। দিনের শেষভাগে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন ও সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে।
এ অবস্থায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ঈশ্বরদী সাবস্টেশন ও খুলনা রিজিওনাল লোড-ডেসপাসসেন্টার ছাড়াও বরিশাল, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও কুষ্টিয়া গ্রিড সাবস্টেশনগুলোর প্রকৌশলী ও কর্মীরা ‘অপরেশন ব্লাক আউট’ পদ্ধতিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে একযোগে কাজ শুরু করেন। তবে গোলযোগের মূল কেন্দ্রস্থল ঈশ^রদী সাবস্টেশনে ব্রেকার ও বাজবারসহ গ্রিডলাইন কানেক্টরগুলো সম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেরামত করে পশ্চিম জোনের জাতীয় গ্রিডলাইনে সঞ্চালন ব্যবস্থা ফেরাতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়। সকাল সাড়ে ১১টার পরে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের গ্রিড সাবস্টেশনসহ ৩৩ কেভি সাব-স্টেশনগুলোতে স্টেশন-লোড চালু করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ১১ কেভি ফিডারের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সরবরহ শুরু হলেও ব্যাপক ঘাটতির কারণে বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায়ই বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। বরিশালে সামিট পাওয়ারের ১১০ মেগাওয়টের ইউনিটটি দুপুর ১ টার পরে চালু হলেও ভোলা ২২৫ মেগাওয়াটের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটি চালুর চেষ্টা চলছিল। একইভাবে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ছাড়াও খুলনা ও ভেড়ামাড়ার পাওয়ার স্টেশনগুলো উৎপাদনে ফেরাতে সময় লাগায় পূর্বজোন থেকে কিছু বিদ্যুৎ এনে পশ্চিম জোনের পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে পিডিবি ও পিজিসিবি ।
Leave a Reply