December 22, 2024, 10:07 pm
একটি দৈনিক কুষ্টিয়া বিশেষ প্রতিবেদন/
কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি কুষ্টিয়ার করোনা সংক্রমণ। সবথেকে বাজে হাল কুষ্টিয়া সদর ও জেলা শহরে। নানা প্রচার-প্রচারনা, লকডাউন, অনুরোধ-উপরোধ, ধমক-ধামক এমনকি আইন প্রয়োগও কোন কাজ দেয়নি। বিশেষজ্ঞগণ বলছেন নিয়মকে তোয়াক্কা না করার কারনেই কুষ্টিয়ায় বেড়েছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। গতরাত (১০ জুলাই) পর্যন্ত জেলার ৬ উপজেলায় সংক্রমণের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৯১৯। আর মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। এর মধ্যে টেস্টের আওতায় এসেছে ১১০৩০ জন মানুষ।
এদিকে যে হারে বাড়ছে তাতে চিকিৎসকেরা আসছে দিনগুলোতে হিমশিম খাবেন বলে মনে করছেন। ইতোমধ্যে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড। শয্যা বাড়াতে নেয়া হচ্ছে উদ্যোগ। তবে রোগী বাড়তে থাকায় হাসপাতালে শয্যা ও অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বশেষ রেড জোন ঘোষণা করে টানা ১৫ দিনের লকডাউন দেয়া হয়। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শেই এটা করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারাই মনে করেন ১৫ দিন ধরে চলা এ লকডাউন ব্যর্থ। কারণ লকডাউন চলাকালে করোনা রোগী কমার চেয়ে বৃদ্ধি পায়। তদের হিসেব অনুযায়ী ২৫ জুন থেকে গতকাল ১০ জুলাই পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরে ১৮৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এটা লকডাউন পূর্ব পরিস্থিতিকে হার মানিয়েছে। শহরের পৌর এলাকায় এই মুহূর্তে রোগীর সংখ্যা প্রায় তিনশর উপর।
সর্বশেষ পেরেক বসানো হয়েছে আবার দোকান-পাট খুলে দিয়ে। টানা ১৫ দিন লকডাউন চলার পর গত মঙ্গলবার এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। সভায় সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা শহরে রেড জোন বহাল রাখার পরামর্শ দেন। তবে প্রশাসন রাতে লকডাউন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।
এখানে জানা যায় দোকান-পাট খোলার ব্যাপারে ব্যবসায়ী নেতারা এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চেম্বারের উর্দ্বতন নেতারা বসে দোকান-পাট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে জেলা প্রশাসনকে জানায়।
চেম্বারের একজন পরিচালক জানান ব্যবসা-বাণিজ্য খুলে দিয়ে হয়তো ঝুঁকি নেয়া হয়েছে তবে জীবন বাঁচাতেও এটা না করে কোন উপায় তাদের সমানে ছিল না। এই চেম্বার নেতা প্রশ্ন করেন দোকান-পাট বন্ধ রেখে কি সংক্রমণ কমানো গেছে ? বরং বেড়েছে বলে দাবি তার।
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন সাধারণ মানুষের অসচেতনতাকেই বেশী দায়ি করেন প্রত্যাশিত ফল না আসায়। তিনি বলেন তিনি বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন জানান কুষ্টিয়ার জন্য এই মুহুর্তে কোন ভালো খবর নেই। তিনি বলেন তিনি ভেবেই পান না যেখানে মানুষকে বাঁচাতে এত আয়োজন কিন্তু সে মানুষই অবলিলায় নিয়ম কানুন ভাঙছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন তবে প্রশাসন হাল ছাড়বে না। সারকারী নির্দেশনা মোতাবেক প্রশাসন মাঠে থাকবে।
Leave a Reply