এম আর পলল/সাদিক হাসান রোহিদ/
শহরের নবাব সিরাজ-উ-দ্দৌলা সড়কের (এনএসরোড)দু’পাশের কয়েকশ দোকানের প্রায় অধিকাংশই মানছে না কোন লকডাউন, কোন রেড জোন, কোন নিষেধাজ্ঞা। একদিকে চলছে প্রশাসনের মাইকিং, চলছে প্রশাসনের মোবাইল কোর্টের তৎপরতা, পুলিশের টহল, তার মাঝেই নানা কৌশলে, গোপনে, প্রকাশ্যে চলছে দোকানীদের কেনা বেচা।
বিগত ২৩ শে জুন, ২০২০ তারিখে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন কতৃক জারীকৃত গণবিজ্ঞপ্তির ৪র্থ পয়েন্টে সকল দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। ঈদের পর সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার কতৃক ঘোষিত রেড জোন ভিত্তিক এলাকা সমূহ সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সাথে কুষ্টিয়া পৌরসভা কতৃক পৌর এলাকার সকল দোকানপাট, মার্কেট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আদেশ দেওয়া হয়।
শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় মুদি ও ঔষধ সামগ্রীর দোকান ছাড়া বাকি সকল প্রকার দোকানপাট ও মার্কেট বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশ রয়েছ্ ে
দৈনিক কুষ্টিয়ার প্রতিবেদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি দোকানে বড়বাজার থেকে মজমপুর গেট পর্যন্ত প্রায় সমগ্র এন.এস জুড়েই চলছে সাটার বন্ধ রেখে কেনাবেচা। দোকানের সামনেই দোকানের কর্মচারীদের পায়চারী করছে। খরিদ্দার দেখলেই চোখের ইশারা কিংবা সংকেতে জানানো হচ্ছে কি প্রয়োজন। খরিদ্দার এর চাহিদা শুনেই আশপাশ দেখে সাটার খুলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে দোকানের মধ্যে খদ্দেরকে আবার সাটার নামিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানো হচ্ছে।
একতারা মোড়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানের কর্মচারিকে দোকান বন্ধ রেখে বেচাকেনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দেন পেটের তাগিদে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বেচাকেনা না করলে মালিক বেতন দিবে না। ঘর সংসার চলবে কিভাবে? মা, বাবা, দুই সন্তান ও গৃহিনী নিয়ে পরিবার।
চাঁদ সুলতানা গার্লস স্কুলের সামনের মার্কেটের এক কাপড়ের দোকানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কর্মচারীর ভাষ্য হলো,“ ঈদের আগে মূল বেতনের তিন ভাগের এক ভাগ পেয়েছি, পরিবার নিয়ে প্রায় না খাওয়া অবস্থা, এভাবে কাজ না করলে বেঁচে থাকবার বিকল্প উপায় নেই।
এদিকে সরকারী তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। দারিদ্র্য সীমা সীমিত থাকা কুষ্টিয়া জেলার পৌর এলাকার অধিকাংশ পরিবারই অর্থনৈতিকভাবে নিজেদের খাদ্যের জোগান দিতে সক্ষম। যারা অতি দারিদ্র্য তাদের সরকার এর পক্ষ থেকে বিগত মার্চ থেকে ত্রাণ ও খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন ব্যক্তি পর্যায় থেকেও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে পর্যাপ্ত।
নাগরিক সমাজে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি রেডজোন, লকডাউন অবমাননা হচ্ছে নাকি জীবিকার তাগিদে এটা করা হচ্ছে।
সূত্রে জানা যায় ঈদের আগে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার নির্বুদ্দিতা ও দুই বিএনপি ঘরারনার চেম্বার নেতার কারসাজিতে মার্কেট জোর জবরদস্তি করে খোলা রাখার পরপরই ঈদের প্রায় দুই সপ্তাহ পর থেকে ব্যাপক আকারে কুষ্টিয়াতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। যেটা এখনও চলমান।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবের করোনা পরীক্ষার ফলাফল উদ্বৃতি দিয়ে জানান যেসকল এলাকায় বিগত সময়ে লকডাউন মানা হয়নি সেকল এলাকাজুড়েই করোনার প্রার্দভাব চলছে। সেকল এলাকা থেকেই রোগী বেশী আসছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শহরের কেন্দ্রস্থল হলো এনএস রোড। লোক সমাগমে এ জায়গাটিই বেশী র্স্পশ কাতর। এখানেই নিয়মটা সব থেকে বেশী কার্যকর করতে হবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার জানান স্পর্শকাতর এলাকা নির্ধারনে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কোন সীমাবদ্ধতা ছিল না। তারা সঠিক জায়গাগুলো চিহ্নিত করেই প্রশাসনকে অবহিত করে। কিন্তু জনগন না মানলে কার কি করার আছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত পিএিম (বার) বলেন কত শক্ত হতে পারে একটি প্রশাসন ? যারা নিয়ম ল্ঘংন করছেন তারা কি জানেন না ফলাফল ? তিনি একরকম নিশ্চিতই যে যারা নিয়ম মানছেন না তারা জেনে বুঝেই মানছেন না।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন আবারও সবাইকে নিয়ম মেনেই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার আহবান জানান। তিনি বলেন সবাই যেন সবার জন্য হুমকি না হয়ে দাঁড়ায়।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি