December 22, 2024, 3:54 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
শনিবারেও কুষ্টিয়ায় ১৯ করোনা পজিটিভ এসেছে। ১৭৬ নমুনা পরীক্ষার ফল এটি। এ নিয়ে জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা অফিশিয়ালী দাঁড়িয়েছে ৩৪৭। শনাক্তের বাইরে কি পরিমাণ রয়ে গেছে কে জানে সেটা। কুষ্টিয়ায় করোনার এই অব্যাহত বৃদ্ধি ঠেকানোই যাচ্ছে না। কখনও গাণিতিক, তখনও জ্যামিতিক হারে এখানে বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে এটা দিন দিন অঅরো বেশী লাগামছাড়া হয়ে উঠছে কিনা বিশেষজ্ঞগণ এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা বলছেন জেলায় করোনা পজিটিভ হবার এই হারটি স্বাভাবিক নয়।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের বিভিন্ন সুত্র বলছে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বোধের স্তরটি না বাড়লে এর ভয়াবহ ফল ভোগ করতে হতে পারে।
এই জেলাতে ২৩ মার্চ প্রথম করোনা শানক্ত হয়। প্রথম দিকে এটির গতি কম ছিল। মার্চের শেষ থেকে পুরো এপ্রিল জুড়ে বৃদ্ধির গতিকে স্বাভাবিকই ছিল বলা যায়। কিন্তু ১৫ থেকে এর বৃদ্ধি আরম্ভ হয়। এটা অব্যাহত। জুন মাসে এসে এটা প্রায় জ্যামিতিক রুপ নিয়েছে।
সচেতন মহল মনে করে দেশজুড়ে কোভিড পরিস্থিতির প্রচলিত আক্রমনের বাইরে থেকে যাওয়াটা কোনক্রমেই সম্ভব নয় তবে এটাকে নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রেখে চলা অবশ্যই সম্ভব। যেমন ধরুন কুষ্টিয়রাই পাশের জেলা মেহেরপুর। এই জেলাটি এখন গ্রীণ জোন। পাশেই কুষ্টিয়া সেখানে অবস্থা এত করুন হতে হবে কেন।
সচেতন মহল মনে করেন কুষ্টিয়ার মানুষের সচেতনতার স্তরটি খুবই নিচের দিকে। আমরাই দেখেছি যখন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন মহল করোনার বিস্তার ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিয়ে দিনরাত মাঠে ঘাটে ঘুরছেন তখন জেলার মানুষ তাদের সাথে চোর-পুলিশ খেলার মতো আচরণ করতে। যখন জেলা প্রশাসনে সভা চলছে কিভাবে বিষয়টি মোকাবেলা করা হবে তখন রাস্তায় আবরোধ দিয়ে মিছিল করা হচ্ছে দোকান-পাট খুলে দেয়ার জন্য। আমরা আমাদের নীতিগত কারনে ব্যবসা-বাণিজ্য কোন ক্রমেই বন্ধের পক্ষে নই। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কোন ভয়াবহতার আশঙ্কা দেখা দিলে তো বিকল্প চিন্তাকে জায়গা দিতেই হবে।
কিন্তু এই জেলাতে সেটি হয়নি। আমরা অনেক কাজ ইতোমধ্যে করে ফেলেছি যা আমাদের করা উচিত হয়নি। যার ফল ভোগ করতে হবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক অফিসার তাপস কুমার সরকার জানান আমাদের কর্মকান্ডে মনে হয়েছে জেলাবাসী জীবন নিয়ে বেঁচে থাকাটাকে জরুরী মনে করেনি। তারা অনেক বেশী গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছে অন্য কিছুতে।
কুষ্টিয়ার পুলিম সুপার এসএম তানভির আরাফাত পিপিএম (বার) মনে করেন জেলা পুলিশের তৎপরতায় কোন কমতি ছিল না। প্রয়োজনে যদি আরো কোন পদক্ষেপের প্রয়োজন হয় নেয়া হবে। তিনি প্রশ্ন করেন কিন্তু কোথায় নেয়া হবে এই পদক্ষেপ ? তিনি বলেন পুলিশ খুবই ধৈর্য নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যাচ্ছে। পুলিশ কাজ করে যাবে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আনলাম হোসেন জানান প্রতিমুহুর্তেই উদ্বেগ বাড়ছে। কোন দিকে জেলাটি এগিয়ে যেতে বসেছে এইমুহুর্তে সেটা বুঝে ওঠা মুশকিল হয়ে উঠেছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন তবে এখনও সময় আছে। তিনি মানুষের সচেতন হবার উপর সবার্ধিক গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন মানুষকে বেঁচে থাকতে হবে তার নিজের তাগিদেই। কিন্তু অনেকেই সেটি অবহেলা করে চলেছেন।
Leave a Reply