দৈনিক কুষ্টিয়া প্রতিবেদক/
কৃষককের কাছ থেকে বোরো ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয় গত এপ্রিল মাসে। ইতোমধ্যে দেশের প্রতিকূল অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যেও টাকা ছাড় করা হয়েছে। সারাদেশেই ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তালিকাও চুড়ান্তকরণ সম্পন্ন। কিন্তু সারাদেশেই তালিকায় কৃষকরা হতাশ । কারন বেশীরভাগ কৃষকই সারকারের কাছে ধান বিক্রয়ের সুযোগ পাবে না।
খোদ কুষ্টিয়া জেলা সদরেই ঘটতে চলেছে এ ঘটনা। এখানে কৃষকদের লম্বা তালিকা সেখান থেকে সামান্য কিছু কৃষক সুযোগ পাবে সরকারের কাছে দান বিক্রয়ের। অবশ্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন। কিছু করার নেই। তারা বলছেন তবে সেই সকল কৃষকদেরকেই তালিকায় আনা হয়েছে যারা প্রকতৃই প্রান্তিক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌর এলাকার ১১হাজার ৬শ ৫২জন কৃষক রয়েছে। যারা ৭৫হাজার ৬শ ২৯ টন ধান উৎপাদন করে। কিন্তু বোরো ক্রয়ের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ২হাজার ৫শ ১জন কৃষকের। তাদের কাছ থেকে ২হাজার ৫শ টন ধান ক্রয় করা হবে।
গত সোমবার কুষ্টিয়ায় এ ক্রয়ের উদ্ধোধন করেছেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন ও খাদ্যবিভাগের আয়োজনে ই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কৃষি কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ সাহা, খাদ্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত কৃষকগণ।
এ চিত্র সারা জেলা জুড়েই।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জেলার ৬টি উপজেলায় ৩হাজার ৩শ ৩০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ২৯ হাজার ৯শ ৪৫ হেক্টর জমিতে উপশী ধানের চাষ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হাইব্রিড ধান ২১হাজার ৭শ ১১ মে:টন এবং উপ্শী জাতের ১লক্ষ ৮৮হাজার ৬শ ৫৩ মে:টন ধানের উৎপাদন হয়েছে।
চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ৩৩হাজার ২শ ৭৫ হেক্টর জমিতে মোট ধান উৎপাদন হয়েছে ২লক্ষ ১০হাজার ৩শ ৬৪ মে:টন।
কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরি) দফতর বলছে জেলার ৬টি উপজেলা থেকে মোট ৬হাজার মে:টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সোমবার প্রথম ধাপে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় কৃষক তালিকা চাড়ান্তকরণ শেষ করে জেলায় সরকারী ধান ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ অবস্থায় পুরো হাতাশা ব্যক্ত করেছে অসংখ্য কৃষক। অনেকেই অভিযোগ করেছে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিদের তালিকায় আনা হয়েছে। তবে বেশীলভাগ কৃষক যখন উৎপাদন ও তালিকার তথ্য পান তারা হতাশা ব্যক্ত করেন।
খোকসার ওসমানপুরের কৃষক বসির উদ্দিন অভিযোগ করেন তিনি অনেকবার তালিকায় নিজের নাম তোলার চেষ্টা করেও পারেননি। তিনি বলেন এত বিশাল তালিকার কৃষকদের থেকে এত কম কৃষককে তালিকায় আনা হয়েছে যে অনেক কৃষকের জানারও সুযোগ হয়নি কিভাবে বিষটি ঘটলো।
কৃষকরা জানান এমনিতেই এবার নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে তারা ঘরে দান তুলেছেন এখন দাম না পেলে তারা বাঁচবেন কি করে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক একে এম শাহনেওয়াজ বলেন তারা সরকারী নির্দেশনার বাইরে যেয়ে তো তালিকা লম্বা করতে পারেন না।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন শতকরা হিসেবে ধান ক্রয়ের এই পরিমান খুবই কম। যার পুরো সুযোগ নেবে কুষ্টিয়ার ধানকল মালিকরা।
জেলা গঙ্গা-কপোতাক্ষ এরিয়ার। এখানে প্রতি খরিপেই একটি নির্দ্দিষ্ট পরিমাণ ধান এমনিতেই উৎপাদন হয়। একানকার ধান সংগ্রহের বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা উচিত।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা জানান সরকারী বরাদ্দের প্রেক্ষিতেই তালিকা প্রনয়ণ করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন যে কৃষকের পরিমাণ অনেক বেশী। তিনি বলেন কিন্তু সবাইকেই তো আর তালিকায় আনা সম্ভব নয়।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন প্রকৃত প্রান্তিক কৃষকরা এখানে মুখ্য, সকল কৃষককে তালিকায় আনা তো অসম্ভব। তবে কৃষি-প্রবন এলাকা কুষ্টিয়া থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহের বিষয়ে যদি সুযোগ থাকে বিশেষ প্রধান্যর বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর : ড. আমানুর আমান,এম.ফিল (আইইউকে), পিএইচডি ( এনবিইউ- দার্জিলিং)
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: শাহনাজ আমান।
কার্যালয়:- থানা ট্রাফিক মোড়, কুষ্টিয়া।মোবাইল- ০১৭১৩-৯১৪৫৭০, ইমেইল: info.dailykushtia@gmail.com
ই-পেপার কপি